SRI SRI PARAMANANDA KANYAPITH ( Narendrapur, Kolkata, West Bengal )

শ্রীশ্রী পরমানন্দ কন্যাপীঠ (নরেন্দ্রপুর )সম্পর্কে

নরেন্দ্রপুর এ বিজয়কৃষ্ণ সাধন আশ্রম প্রতিষ্ঠিত করার পাশাপাশি অনতিদূরে শ্রী শ্রী ঠাকুর স্থাপন করেছিলেন শ্রী শ্রী বিজয়কৃষ্ণ পল্লী । নরেন্দ্রপুর আশ্রমের জমি কেনার কিছু পরেই ঠাকুরজি ভক্তদের বসবাস করার জন্য একটি পল্লী করার কথা চিন্তা করেছিলেন । সাধন প্রাপ্ত মানুষেরা যাতে একত্রিত হয়ে জীবন গঠন করতে পারেন, সেজন্য তাঁর চেষ্টা ছিল নিরলস । 1980 সালে দুর্গানগর যাওয়ার আগে শ্রী শ্রী ঠাকুর পল্লীতে  মহিলা  আশ্রমের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন, বলেছিলেন ফিরে এসে কাজ শুরু করবেন । এই পল্লীতে ঢোকার মুখে প্রায় পাঁচ বিঘা মত একটা জমি তিনি আশ্রমের জন্য রাখেন । শ্রী শ্রী ঠাকুরের ভীষণ ইচ্ছা ছিল দুই একটি মহিলা আশ্রম গড়ার   । ঠাকুরজি দেহ রাখার পর মহিলা আশ্রম হবে কিনা প্রশ্ন দেখা দিল ।  ঠিক এই সময়ে শ্রীরবীন্দ্রনাথ সরকার একটি স্বপ্ন দেখলেন — ঠাকুরজি জিজ্ঞাসা করছেন রবি আমার মহিলা আশ্রম এর খবর কি ? তিনি উত্তর দেন আপনি যেমন রেখে গেছেন তেমনই আছে । সেই সময় মহিলাশ্রমের জমিতে চাষ বাস হত । এই স্বপ্নের কথা শুনে সকলের মধ্যে এক অদ্ভুত পরিবর্তন দেখা দিল । সকলেই চাইলেন ঠাকুর যখন চাইছেন তখন হোক মহিলা আশ্রম   ।  শ্রী শ্রী ঠাকুরের লীলা সংবরনের পর শ্রীযুক্ত বঙ্কিম বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অচিন্ত্য কুমার মিত্রের তত্ত্বাবধানে এখানে নির্দিষ্ট জমিতে আশ্রমটি নির্মিত হয় । ইংরেজি 1988 সালে শ্রী পরমানন্দ কন্যা পিঠের উদ্বোধন হয়। মহিলাদের মধ্যে শ্রীমতি অঞ্জনা চৌধুরী ও শীলা পুরকায়স্থ নিজেদের সুবিধা অসুবিধার কথা চিন্তা না করে, শ্রী শ্রী ঠাকুরের স্বপ্ন বাস্তবে রূপায়িত করার জন্য এই মহিলা আশ্রমে আত্মনিয়োগ করেন । শ্রী শ্রী যোগমায়া  ঠাকুরানীর আদর্শে এখানে শ্রবন, মঙ্গল, তাঁর নাম লীলা গুনকীর্তন, শাস্ত্র পাঠের হয়েছে উপযুক্ত ব্যবস্থা। মাসের প্রথম রবিবার হরি কীর্তন হয়ে থাকে। সকাল ছটা  থেকে  সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত। পরবর্তী সময়ে এই দুইজন মহিলাকে কেন্দ্র করে আরও কেউ কেউ এই মহিলা আশ্রমে যোগ দিয়েছেন। মহিলা আশ্রমের নামকরণ হয়েছে শ্রীশ্রী পরমানন্দ কন্যাপীঠ।  1997 সালে বাংলা 1404 সালে 28 শে শ্রাবণ বুধবার বেলা 10 টায় শুভক্ষণে শ্রী পরমানন্দ কন্যাপিঠে পুষ্করিণী “মন্দাকিনীর” উদ্বোধন হয়। 

এই আশ্রমে মাতা ঠাকুরানী শ্রীশ্রী যোগমায়া দেবীর জন্মোৎসব খুব বৃহৎ আকারে পালিত হয়। সেই উপলক্ষে অনেক গুরু ভগ্নী গণ নানা স্থান থেকে কয়েকদিন আশ্রম এ বাস করেন। স্থান সংকুলানের জন্য ঠাকুরের নকশা অনুযায়ী শ্রী মন্দিরের পেছনে 90 ফুট লম্বা 20 ফুট চওড়া একটি হলঘর বানানো হয় । একটি অদ্ভুত ঘটনা ঘটে তখন 1996 সাল। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে চার হাজার ফুট ঢালাই কি করে সম্ভব হল, তা এক আশ্চর্য ব্যাপার । এই কাজে ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন অসীম কুমার সরকার ও মিস্ত্রি ছিলেন বিকাশ সরকার।